
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় একটি বাড়িতে পটকা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত একটি আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ১৮ আগস্ট গভীর রাতে। ঘাটাইল থানাধীন চকপাকুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা অমর বনিকের বাড়িতে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দেয়। তারা বাড়ির মালিক অমর বনিক এবং তার মা কৃষ্ণা রাণীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, রুপার গহনা, পিতলের মূর্তি এবং মোবাইল ফোনসহ প্রায় ৬,৪১,৮০০ টাকা মূল্যের জিনিসপত্র লুট করে। ডাকাতির সময় বাধা দেওয়ায় ডাকাতদের ধারালো ছুরির আঘাতে অমর বনিক আহত হন।
ডাকাতি শেষে পালানোর সময় ডাকাতরা পটকা ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ও ভয়ের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান একটি বিশেষ দল গঠন করেন। এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন ডিবি (উত্তর) পুলিশের এসআই আহসানুজ্জামান। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে।
তদন্তের এক পর্যায়ে গত ২৫ আগস্ট গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে ডাকাত দলের সদস্য মোঃ সোহাগ মন্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে লুন্ঠিত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সোহাগ মন্ডল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং দলের অন্যদের পরিচয় প্রকাশ করেন।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে দলের মূল পরিকল্পনাকারী মিন্টুকে গ্রেফতার করে। মিন্টু বাকি সদস্যদের নাম ও অবস্থান জানান। এরপর গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার কোনাবাড়ী থেকে একে একে আরও পাঁচজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- মোশাররফ, জসিম, আমিনুল, আনোয়ার এবং ময়নাল।
পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ০৫ রতি স্বর্ণ এবং ৩৪ ভরি রুপাসহ কিছু লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করেছে। জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধভাবে এই ধরনের অপরাধ করে আসছে।
এই গ্রেফতারের ফলে শুধু এই মামলারই রহস্য উদঘাটন হয়নি, বরং স্থানীয় জনগণের মনে ফিরে এসেছে স্বস্তি। ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ দমনে পুলিশ আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে।