সিলেট ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
News Title :
‎বানিয়াচংয়ে গভীর রাতে প্রবাসীর বাড়ি দখল, নিরীহ পরিবার জিম্মি! ‎নবীগঞ্জে চোরাই মোবাইল উদ্ধারে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলা: ৫ জন আটক, ৬ পুলিশ সদস্য আহত‎ ‎নবীগঞ্জে আত্মহত্যা ও দাঙ্গা প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসনের সচেতনতামূলক সভা‎ সিলেটের জৈন্তাপুরে পালিত হলো জাতীয় কন্যা শিশু দিবস ‎ধনবাড়ীতে ওলামা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত: আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ‎সিলেটের বিভিন্ন সীমান্তে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় গরু-মহিষের চোরাচালান আটক: বিজিবি’র সাফল্য ‎সখীপুরে মুসলিম জুয়েলার্সকে ১ লাখ টাকা জরিমানা ‎ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে হবিগঞ্জে আইনজীবীদের মানববন্ধন ‎টাঙ্গাইল সদরে চাড়াবাড়ি এস ডি এস ব্রীজের পশ্চিম অংশ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন মৃতের স্ত্রী হত্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিক পরিবারকে হয়রানি, তদন্ত প্রতিবেদনের উপর তিনবার নারাজি ॥
সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

‎বানিয়াচংয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: আহত ২০, ভাংচুর মোটরসাইকেল‎

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় ঘন্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।





‎হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নে গত ২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকালে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় ঘন্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন এবং একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


‎ঘটনার সূত্রপাত: একটি বেত কাটা নিয়ে বিরোধ
‎জানা যায়, শুক্রবার আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে তারাসই গ্রামের বাসিন্দা কুদরত মিয়ার ছেলে যাত্রাপাশা মহল্লার বাসিন্দা সামছুদ্দিন মিয়ার ভাতিজা সলিম মিয়ার ঝোপ থেকে মাদ্রাসার হুজুরের কথা অনুযায়ী অনুমতি না নিয়ে একটি বেত কেটে নেয়।

এই ঘটনা নিয়ে সলিম মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া বিষয়টি কুদরত মিয়াকে জানালে, কুদরত মিয়া উল্টো হাসান মিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর ছেলেকে গায়ের জোর খাটিয়ে মারপিট করার অভিযোগ তুলে ক্ষিপ্ত হন।

এরপর কুদরত মিয়ার ছেলে ও তার সাথে থাকা কয়েকজন মিলে তাদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটায়। হাতাহাতির ঘটনার সূত্র ধরে তারাসই গ্রামের কুদরত মিয়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র যেমন— টেঁটা, ফিকল, বল্লম, দা, রামদা সহ সুসজ্জিত হয়ে যাত্রাপাশার দিকে আসার খবরটি মুহূর্তের মধ্যে যাত্রাপাশার লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিরোধ করতে তারাও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কুন্ডুর পাড় পয়েন্টে অবস্থান নেন। সেখানেই উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়।


‎থামাতে গিয়ে ভাংচুর হলো নেতার মোটরসাইকেল
‎সংঘর্ষ চলাকালে বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের যাত্রাপাশা মহল্লার উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মোয়াজ্জেম মিয়া তার কিছু লোকজন নিয়ে সংঘর্ষ স্থলে গিয়ে তাদের ফেরানোর চেষ্টা করেন।

এসময় তারাসই গ্রামের লোকজন তার মোটরসাইকেলটি ভাংচুর করে। এই খবরটি শেখ মোয়াজ্জেম মিয়ার লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

‎প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নারী-পুরুষসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। তারাসই গ্রামের আহত প্রায় ১০ জনের মধ্যে কেউই ভয়ে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আসেননি। গ্রামবাসী নিশ্চিত করেছেন যে তারা আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গ্রামবাসী জানিয়েছেন, সংঘর্ষের পর থেকে তারাসই গ্রামের আহত ও সাধারণ বাসিন্দারা স্থানীয় নতুনবাজার বা বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন এবং এলাকায় আতঙ্কে রয়েছেন।

‎খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর একটি দল তারাসই গ্রামে গিয়ে সংঘর্ষের মূল কারণ তদন্ত করে। ছেলের কথা অনুযায়ী বেত নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি যাচাই করতে মাদ্রাসার হুজুরকে খবর দিয়ে আনা হলে, হুজুরের কথায় বেত নিয়ে যাওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী গ্রামবাসীকে পুনরায় সংঘর্ষে না জড়াতে সতর্ক করে এবং এলাকায় টহল দিয়ে যায়।


‎এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে এলাকায় উভয়পক্ষের মধ্যে এখনো টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং যেকোনো সময় পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

‎বানিয়াচংয়ে গভীর রাতে প্রবাসীর বাড়ি দখল, নিরীহ পরিবার জিম্মি!

সেনাবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

‎বানিয়াচংয়ে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ: আহত ২০, ভাংচুর মোটরসাইকেল‎

সময় ০৫:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় ঘন্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।





‎হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নে গত ২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকালে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় ঘন্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন এবং একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।


‎ঘটনার সূত্রপাত: একটি বেত কাটা নিয়ে বিরোধ
‎জানা যায়, শুক্রবার আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে তারাসই গ্রামের বাসিন্দা কুদরত মিয়ার ছেলে যাত্রাপাশা মহল্লার বাসিন্দা সামছুদ্দিন মিয়ার ভাতিজা সলিম মিয়ার ঝোপ থেকে মাদ্রাসার হুজুরের কথা অনুযায়ী অনুমতি না নিয়ে একটি বেত কেটে নেয়।

এই ঘটনা নিয়ে সলিম মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া বিষয়টি কুদরত মিয়াকে জানালে, কুদরত মিয়া উল্টো হাসান মিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর ছেলেকে গায়ের জোর খাটিয়ে মারপিট করার অভিযোগ তুলে ক্ষিপ্ত হন।

এরপর কুদরত মিয়ার ছেলে ও তার সাথে থাকা কয়েকজন মিলে তাদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটায়। হাতাহাতির ঘটনার সূত্র ধরে তারাসই গ্রামের কুদরত মিয়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র যেমন— টেঁটা, ফিকল, বল্লম, দা, রামদা সহ সুসজ্জিত হয়ে যাত্রাপাশার দিকে আসার খবরটি মুহূর্তের মধ্যে যাত্রাপাশার লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিরোধ করতে তারাও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কুন্ডুর পাড় পয়েন্টে অবস্থান নেন। সেখানেই উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়।


‎থামাতে গিয়ে ভাংচুর হলো নেতার মোটরসাইকেল
‎সংঘর্ষ চলাকালে বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের যাত্রাপাশা মহল্লার উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মোয়াজ্জেম মিয়া তার কিছু লোকজন নিয়ে সংঘর্ষ স্থলে গিয়ে তাদের ফেরানোর চেষ্টা করেন।

এসময় তারাসই গ্রামের লোকজন তার মোটরসাইকেলটি ভাংচুর করে। এই খবরটি শেখ মোয়াজ্জেম মিয়ার লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

‎প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নারী-পুরুষসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। তারাসই গ্রামের আহত প্রায় ১০ জনের মধ্যে কেউই ভয়ে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য আসেননি। গ্রামবাসী নিশ্চিত করেছেন যে তারা আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গ্রামবাসী জানিয়েছেন, সংঘর্ষের পর থেকে তারাসই গ্রামের আহত ও সাধারণ বাসিন্দারা স্থানীয় নতুনবাজার বা বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন এবং এলাকায় আতঙ্কে রয়েছেন।

‎খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর একটি দল তারাসই গ্রামে গিয়ে সংঘর্ষের মূল কারণ তদন্ত করে। ছেলের কথা অনুযায়ী বেত নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি যাচাই করতে মাদ্রাসার হুজুরকে খবর দিয়ে আনা হলে, হুজুরের কথায় বেত নিয়ে যাওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী গ্রামবাসীকে পুনরায় সংঘর্ষে না জড়াতে সতর্ক করে এবং এলাকায় টহল দিয়ে যায়।


‎এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে এলাকায় উভয়পক্ষের মধ্যে এখনো টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং যেকোনো সময় পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।