
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মনতৈল অ্যাডভোকেট আবু জাহির মডেল কলেজের খেলার মাঠ লিজ দিয়ে ধান চাষের প্রস্তুতি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কলেজের অধ্যক্ষ রফিক আলী গভর্নিং কমিটির অনুমোদন ছাড়াই এই জমি লিজ দিয়েছেন এবং প্রাপ্ত অর্থ শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন।
সরেজমিনে কলেজের সামনের খেলার মাঠ পরিদর্শন করে দেখা যায়, সেখানে হাল চাষ করা হয়েছে এবং ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করা হচ্ছে। স্থানীয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী জানান, মাঠটি চাষ করায় তাদের খেলাধুলা ব্যাহত হবে এবং কলেজের সৌন্দর্যও নষ্ট হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মচারী অভিযোগ করেন, লিজ বাবদ পাওয়া ৪১ হাজার টাকা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায় ।
অধ্যক্ষের বিতর্কিত মন্তব্য
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ রফিক আলী বলেন, কলেজের গভর্নিং কমিটির সিদ্ধান্তেই জমি লিজ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ৫ নং করাব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস কমিটির দায়িত্বে আছেন বলে তিনি জানান। তবে, তিনি কাকে লিজ দেওয়া হয়েছে তার নাম বলতে পারেননি।
অধ্যক্ষ রফিক আলী আরও বলেন, “আমার কলেজে তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। যেহেতু আপনি সাংবাদিক হিসেবে ফোন করেছেন, আপনি শনিবার অথবা রোববার এসে আমার বিদ্যুৎ বিল দিয়ে যান।” সাংবাদিক কেন বিল দেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনারা যেহেতু এসব খোঁজ নিতে চান, তাহলে তো বিদ্যুৎ বিল আপনারাই দিবেন।” অধ্যক্ষের এই মন্তব্য ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য
৫ নং করাব ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস জানান, তিনি জানেন যে জায়গাগুলো লিজ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এর বিস্তারিত প্রক্রিয়া বা টাকার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি বলেন, বিষয়টি জেনে পরে জানাবেন।
লাখাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী শারমিন নেওয়াজ বলেছেন, যদি কেউ কলেজের জায়গা লিজ দিয়ে থাকে এবং গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ আসে, তাহলে তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এই ঘটনায় এলাকার সুশীল সমাজ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত এই বিষয়ে তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।