
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা সদরের প্রত্যন্ত অঞ্চল ৮ নং খাগাউড়া ইউনিয়নের রাঙ্গাহাটি গ্রামে এক ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। প্রবাসী মহিবুর রহমানের পুরুষশূন্য পরিবারকে জিম্মি করে একদল দখলবাজ গভীর রাতে টিনশেড ঘর নির্মাণ করেছে।
শুধু তাই নয়, চারটি পরিবারের প্রায় ৩০ জন নারী-পুরুষ ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে তারা কার্যত জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা এবং পুলিশের বারবার অভিযানের পরও এমন নির্মমতা ঘটায়।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, গ্রামের তাজুল মিয়া, আশিকুর রহমান, আতিকুর রহমান, আঃ আহাদ, আমিনুল হক, আসাব আলীসহ তাদের সঙ্গীরা প্রবাসী মহিবুর রহমান এবং তার ভাই মতিউর রহমান ও মুজিবুর রহমানের চলাচলের রাস্তার মাঝখানে খনন করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। প্রবাসীর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ওই জায়গায় ১৪৪ ধারা (নিষেধাজ্ঞা) জারি করেন।

আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে তাজুল মিয়ারা ফের দখল করতে এলে কিছুদিন আগে সংঘর্ষ হয় এবং উভয়পক্ষের লোকজন আহত হন। পাল্টাপাল্টি মামলায় সম্প্রতি মুজিবুর ও মতিউর আদালতে হাজির হলে তারা কারাবন্দী হন।
মুজিবুর ও মতিউর রহমানের হাজতবাসের সুযোগ নিয়ে গত মঙ্গলবার প্রবাসীর বাগানবাড়ি ও রাস্তায় ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিলে মুজিবুরের স্ত্রী সলিমা বেগম বানিয়াচং থানায় অভিযোগ জানান।
পুলিশ গিয়ে দখলবাজদের সতর্ক করে এলেও, একই দিনগত রাত ২টার দিকে তাজুলসহ ২০-২৫ জন মিলে দ্রুত জায়গাটিতে টিনশেড ঘর নির্মাণ শুরু করে।
নিরুপায় সলিমা বেগম প্রথমে থানায় ফোন করে ব্যর্থ হন। এরপর ত্রিপল নাইনে (৯৯৯) কল করেও পুলিশ সেখানে যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। অবশেষে, সলিমা বেগম রাত ৩টা ২৮ মিনিটে যুগান্তর বানিয়াচং প্রতিনিধিকে ফোন করেন।
খবর পেয়ে প্রতিনিধি রাত সাড়ে ৩টায় বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান-কে ফোন করেন। ওসি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠান, কিন্তু ততক্ষণে ভূমিদস্যুরা ঘর নির্মাণ শেষ করে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দখলবাজরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রবাসী পরিবারটি রীতিমতো জিম্মি দশায় ও চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। ভুক্তভোগী সলিমা বেগম জানান, দখলবাজরা ফের গাছগাছালি কেটে নেওয়া ও তাদের বাড়িঘরে হামলা করার পাঁয়তারা করছে।
বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, গভীর রাত হলেও তাৎক্ষণিক পুলিশ অভিযান চালিয়েছে এবং আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে চলমান আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।