
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে আলোচিত ‘৯ মার্ডারের’ মামলার ১২৩ নম্বর আসামি, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মারুফ আহমেদ (৪২) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
গত বছরের ৫ আগস্টের ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের করা একটি মামলায় তিনি দীর্ঘ ১ বছর ২৫ দিন ধরে পলাতক ছিলেন।
জানা যায়, ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেল ৪টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শেখ মারুফ আহমেদ যাত্রাপাশা মহল্লার উমর আলী মাস্টারের ছেলে। তার আকস্মিক মৃত্যুতে এলাকার রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
গত বছর ৫ আগস্টের ছাত্র আন্দোলন এবং পুলিশ সংঘর্ষে সাংবাদিক ও পুলিশসহ ১০ জনের প্রাণহানি হয়। ঘটনার ১৬ দিন পর নিহত এক পরিবারের মাধ্যমে ৯টি খুনের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে এটিকে ‘মিথ্যা মামলা’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই মামলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে ১২৩ নম্বর আসামি ছিলেন শেখ মারুফ আহমেদ।
মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা পলাতক জীবনযাপন করছেন। এ মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানসহ অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কারাভোগ করছেন।
বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ময়েজউদ্দিন শরিফ রুয়েলসহ আরও অনেক আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন।
পলাতক থাকা অবস্থায় শেখ মারুফের মৃত্যুর খবরটি দ্রুত ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, বিশেষ করে তার পলাতক সহযোদ্ধারা, নিজেদের আইডি থেকে ছবিসহ শোক প্রকাশ করেন এবং তার আত্মার শান্তি কামনা করেন। দলের পক্ষ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ময়েজউদ্দিন শরিফ রুয়েলও আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেন।
তার জানাজার নামাজ ১৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় যাত্রাপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে দল-মত নির্বিশেষে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমাগণ জানাজার নামাজে অংশ করেন।
এই মামলার কারণে অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে জেল খাটছেন এবং যারা পলাতক আছেন, তারাও মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানাগেছে।
তাদের অনেকেই আজ শেখ মারুফের শেষ দেখাটুকুও দেখতে পারলেন না বা জানাজায় অংশ নিতে পারলেন না। এটা আওয়ামিলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও অভিযোগ লক্ষ করা গেছে।