
নজমুল ভাই আর আমাদের মাঝে নেই।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)! খবরটা শুনার পর থেকেই মনটা অস্থির অস্থির লাগতেছে। আহ্ ছোটবেলা এল.আর হাইস্কুল মাঠ, এড়ালিয়া মাঠে কতো ছুটে গিয়েছি শুধুমাত্র নজমুল ভাইয়ের ফুটবল শৈলী দেখার জন্য। নজমুল ভাই মানেই ফাইভ এন্ড সিক্স আর ফাইভ এন্ড সিক্স মানেই নজমুল ভাই। তবে আমি নজমুল ভাইকে লাস্ট খেলতে দেখেছিলাম এড়ালিয়া মাঠে রোজ ইলেভেন এর হয়ে। একটি টুর্নামেন্টকে ঘিরে তখনকার বানিয়াচংয়ের সব স্টার প্লেয়ারদেরকে নিয়ে রোজ ইলেভেন খেলতে নামছিলো ওই টুর্নামেন্টে। সেই ম্যাচেও নজমুল ভাই অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছিলেন। বিশেষ করে মাঝমাঠে বল ধরে একাই তিন তিনটি প্লেয়ারকে ডজ দিয়ে যে গোলটি করেছিলেন তা আজো আমার চোখবন্দি হয়ে আছে। ছোটবেলা আমরা ভাই-বন্ধুরা প্রায় সময়ই ফুটবল নিয়ে নানান তর্ক-বিতর্ক করতাম। কিন্তু যখনই কেউ প্রশ্ন করতো- “ক’ছাইন ডিস্টিক সেরা কে” তখন কোন তর্ক ছাড়াই আমরা সবাই একবাক্যে নজমুল ভাইকে ডিস্ট্রিক্ট সেরা খেলোয়াড় বলে স্বীকৃতি দিতাম। আমাদের চোখে নজমুল ভাই এমনই সেরা একজন ফুটবল জাদুকর ছিলেন। নজমুল ভাই ছিলেন বানিয়াচংয়ের ফুটবল রাজা।
প্রায় দুই যুগ পর যখন নজমুল ভাইয়ের সাথে একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পরিচয় হলো, কথা হলো তখন আরেক নজমুল ভাইকে আবিষ্কার করলাম। মানুষটা সত্যি সহজ-সরল ও অত্যন্ত মিশুক প্রকৃতির ছিলেন। তার তুতলানো স্বভাবে কথার ধরণ যেনো তার সরলতাকেই ধারণ করে যাচ্ছিলো আমৃত্যু। ফুটবল পাগল আমাদের সকলের প্রিয় নজমুল ভাইয়ের এই হঠাৎ চলে যাওয়ার খবরে বিষন্ন মনে যখন এই স্মতিকথাগুলো লিখছি তখন স্টেডিয়াম (এল.আর হাইস্কুল), এড়ালিয়া মাঠ, জুয়েল মাঠ, ফুটবল ও আমাদের ম্যারাডোনা নজমুল ভাই চোখের সামনে ঝলমল করে ভাসছেন।
মহান আল্লাহ, ভাইয়ের যাপিত জীবনের সকল গুনাহ খাতা মাফ করে দিয়ে ভাইকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন….আমীন।
বাড়িতে না থাকায় শেষ দেখাটা আর হলো না🥲
লেখক- কবি ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব।