
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আমরা প্রায়শই নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে থাকি, এর অপব্যবহার নিয়ে সমালোচনায় মুখর হই। কিন্তু এই মাধ্যম যে শুধু অকাজের জন্য নয়, বরং অনেক সময় অসাধারণ মানবিক ও সৃজনশীল কাজের প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে, তার প্রমাণ আমরা প্রায়শই পাই। ভালো কাজের মাত্রা এবং সংখ্যা এই মাধ্যমে নেহাত কম নয়; বরং অসংখ্য মানুষ প্রায়শই ভালো কাজে এবং মানবতার পাশে এসে দাঁড়ান।
গত কাল এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এমনই একটি ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইতিবাচক দিকটিকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থী একটি মেয়ে তার জীবনের এক কঠিনতম মুহূর্তে পরীক্ষা কেন্দ্রে সময়মতো পৌঁছাতে পারেনি। তার বাবা নেই, এবং সকালে তার মা স্ট্রোক করায় তাকে হাসপাতালে রেখে আসতে অনেকটা সময় লেগে যায়। এর ফলে সে সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে পারেনি। যখন সে কেন্দ্রে পৌঁছায়, ততক্ষণে পরীক্ষার অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। হল পরিদর্শক তাকে হলে প্রবেশ করতে দেননি।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনা, মেয়েটির হতাশা ও কান্নায় ভেঙে পড়ার ছবি ও ভিডিও দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই এটি দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। নেটিজেনরা এই ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন। একই সাথে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমেই এই খবর শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের নজরে আসে। ফলস্বরূপ, শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা মেয়েটিকে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দেওয়ার আশ্বাস দেন। এই খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জড়িত মানুষজনের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে আসে।
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম শুধুমাত্র সমালোচনার পাত্র নয়, বরং এটি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এবং দ্রুত তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার এক শক্তিশালী হাতিয়ার।