
লাখাই প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি, সময়ের আলোচিত সাহসী কলম সৈনিক এবং ছাত্রনেতা প্রোটন দাশগুপ্ত ১৯৯৯ সালের এই দিনে মর্মান্তিকভাবে নিহত হন।
প্রোটন কুমার দাশগুপ্ত ১৯৭৩ সালে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার স্বজন গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন ডা: সুভাষ দাশগুপ্ত এবং মা রেনু বালা দাশগুপ্ত। তিনি লাখাই ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারি বৃত্তি লাভ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে মাধবপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯০ সালে সিলেট মদন মোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৯১-৯২ সেশনে প্রোটন ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হন। ছাত্রাবস্থায় তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক লাল সবুজ ও সাপ্তাহিক সুগন্ধা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হন।
১৯৯৯ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এই রিপোর্টের জেরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ক্ষিপ্ত হয়ে ১৯৯৯ সালের ১৪ জুন হবিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে প্রোটন দাশগুপ্তের ওপর হামলা চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেদিন রাত ১১টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হবিগঞ্জ কোর্টে ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০০২ সালে মামলার চার্জ গঠন করা হলেও, ২০০৪ সালে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষীর অভাবে আসামিরা বেকসুর খালাস পেয়ে যায়।
প্রতি বছর বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ১৪ জুন প্রোটন দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। সাংবাদিক প্রোটন দাশগুপ্তের ২৫তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে লাখাই প্রেসক্লাব এ বছর নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সাংবাদিক প্রোটন দাশগুপ্তের স্মরণে স্মরণসভা এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান। এছাড়াও তাঁর পরিবার ও ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে।
প্রয়াত সাংবাদিক প্রোটন দাশগুপ্তের স্মৃতি ও সাংবাদিকতার প্রতি তাঁর অদম্য সাহস সবাইকে অনুপ্রাণিত করে?