
হবিগঞ্জ শহরে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এসএসসি পরীক্ষার্থী জনি দাস হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাজু মিয়াকে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ (বুধবার) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামী সাজু মিয়ার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামী সাজু মিয়ার (২২) পক্ষে কোন আইনজীবী দাড়াঁননি। আসামী সাজুর রিমান্ড শুনানি শেষে হাজতে নেওয়ার পথে আদালতের বাইরে উত্তেজিত জনতা সাজু মিয়াকে উত্তম-মাধ্যম দেয়। এ সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। পরে বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ত্রিলক কান্তি চৌধুরী বিজন উত্তেজিত জনতা কে শান্ত করতে এলে বিক্ষুব্ধ জনতার সাথে কথা-কাটাকাটি হলে সেখানে আরও উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে সদর থানার ওসির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়।

উল্লেখ্য গত ৩ জুলাই হবিগঞ্জ শহরে চুরির উদ্দেশ্যে জনি দের বাসায় প্রবেশ করে আসামি সাজু মিয়া (২২) এসময় এসএসসি পরীক্ষার্থী জনি দাস( ১৭) ও তার ভাই জীবন দাস চোর সাজু কে বাধা দিলে দুই ভাই কে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত জনি দাস কে হবিগঞ্জ সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাঁকে কে মৃত ঘোষণা করেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে এবং জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জনি হত্যার বিচায় চেয়ে ছাত্রজনতা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে।
গত ৫ জুলাই নিহত জনির বাবা নরধন দাস হবিগঞ্জ সদর থানায় অজ্ঞাত নামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ৭ জুলাই ভোরে শহরের কামড়াপুর এলাকা থেকে আসামী সাজু মিয়া কে গ্রেফতার করে। সাজু আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমভাগ গ্রামের বাসিন্দা।
আজ দুপুরে সাজু মিয়াকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হয়। রিমান্ড আবেদনে পুলিশ জনি হত্যায় তার ভূমিকার বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য উদঘাটনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন বলে জানায়। শুনানি শেষে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট সাজু মিয়ার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালত থেকে বের করে হাজতে নেওয়ার সময় বাইরে অপেক্ষারত শত শত উত্তেজিত জনতা সাজু মিয়াকে ঘিরে ধরে এবং মারধর শুরু করে। জনতা ‘সাজুর ফাঁসি চাই’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয় এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অবশেষে পুলিশ সাজু মিয়াকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে দ্রুত প্রিজন ভ্যানে তুলে হাজতে নিয়ে যায়।
জনতার এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ নিহত জনির প্রতি তাদের ভালোবাসা এবং খুনির প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত বিচার দাবি জানিয়েছে নিহত জনির পরিবার ও এলাকাবাসী। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রিমান্ডে সাজু মিয়াকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।