
বানিয়াচংয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় খারাপ হয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলায় ২৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মোট ২৫৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬৪৭ জন পাস করেছে, যা পাশের হার ৬৪.১১%।
বিদ্যালয়ভিত্তিক ফলাফল
উপজেলার স্বনামধন্য বিদ্যালয়গুলোর ফলাফলও আশানুরূপ হয়নি। উপজেলা মাধ্যমিক অফিসের তালিকা অনুযায়ী:
* এলআর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়: ৮৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৪ জন পাস করেছে। পাশের হার ৭৬.০২% এবং ৪ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
* সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়: ১১৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯২ জন পাস করেছে। পাশের হার ৭৮.৬৩% এবং ৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
* আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়: ২৮৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১৬০ জন পাস করেছে। তাদের পাশের হার ৫৬.৩৪% এবং ১৪ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এটি উপজেলার বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলেও তাদের ফলাফল খুবই খারাপ।
* সন্দলপুর বিসি উচ্চ বিদ্যালয় (সদরের বাইরে): ১২৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৭ জন পাস করেছে। পাশের হার ৭৮.৮৬% এবং ৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোর ফলাফলও আশানুরূপ হয়নি বলে জানা গেছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক সুপারভাইজার সম্পদ কান্তি তালুকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
শিক্ষার মান নিয়ে উদ্বেগ
বানিয়াচং, যা ‘এশিয়ার মহাগ্রাম’ হিসেবে পরিচিত, শিক্ষার দিক থেকে কতটা পিছিয়ে আছে তা এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল থেকে স্পষ্ট। যেখানে নরসিংদীর আব্দুল কাদির মোল্লা স্কুলের ৩০২ জন শিক্ষার্থীই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছে এবং সবাই জিপিএ-৫ পেয়েছে (যদিও সেখানে দেশসেরা শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়), সেখানে বানিয়াচংয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার নাজুক চিত্র ফুটে উঠেছে।
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার জটিলতা
২০২৪ সালের ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে সরকারের পতনের পর থেকে বানিয়াচংয়ের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এবং মেধাবী বিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যালয় বর্তমানে প্রধান শিক্ষকবিহীন অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। ম্যানেজিং কমিটিও সক্রিয় নয় এবং প্রায় সব বিদ্যালয়ই অ্যাডহক কমিটি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
এই সামগ্রিক পরিস্থিতি বানিয়াচংয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতির পেছনে একটি বড় কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
