
ভূমি অধিকার এবং দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরিসহ ১০ দফা দাবিতে চা-শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের ১ম জাতীয় সম্মেলন আজ শ্রীমঙ্গলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই সম্মেলন উদ্বোধন, সমাবেশ, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চা-শ্রমিকরা তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার ইতিহাস ও প্রতিরোধের চেতনা তুলে ধরেন।
উদ্বোধনী পর্ব ও সাংস্কৃতিক আয়োজন
সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং চা-শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আহ্বায়ক সবুজ তাঁতি সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চা শ্রমিক কেন্দ্রের সংগঠক মনীষা ওয়াহিদ।
এর আগে সকাল ১০টায় শুরু হয় সম্মেলনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চা-জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি, সংগীত, আবৃত্তি ও নাটকের মাধ্যমে তারা তাদের বঞ্চনার ইতিহাস ও অধিকার আদায়ের দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করেন। বিশেষ করে ঐতিহাসিক “মুল্লুক চলো” আন্দোলন নিয়ে পরিবেশিত নাটকটি দর্শকদের গভীরভাবে প্রভাবিত করে।

র্যালি ও সমাবেশে অধিকারের সুর
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর হাজার হাজার চা-শ্রমিকের অংশগ্রহণে একটি বিশাল র্যালি শ্রীমঙ্গল শহর প্রদক্ষিণ করে। ব্যানার, ফেস্টুন ও স্লোগানে মুখরিত এই র্যালিতে শ্রীমঙ্গলসহ সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ অঞ্চলের সহস্রাধিক চা-বাগান থেকে শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও যুবকরা অংশ নেন।
সমাবেশে উদ্বোধকের বক্তব্যে কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম চা-শ্রমিকদের প্রতি চলমান বৈষম্যের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবথেকে নিপীড়িত, বঞ্চিত ও অবহেলিত এই চা-জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের লড়াই-সংগ্রামের পরও তাদের অধিকার বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “এরশাদের আমলে আমরা আন্দোলন করে অধিকার আদায় করেছি, কিন্তু আপনি চা জনগোষ্ঠীর ভূমির অধিকার দিতে আপনার সমস্যা কি? বাগানের বাইরেও অনেক জায়গা আছে যেগুলো তাদের দেওয়া যায়।” একইসাথে তিনি দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরিসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানান।
আলোচনা পর্ব ও ভবিষ্যতের অঙ্গীকার
সম্মেলনের পরবর্তী আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন সবুজ তাঁতি এবং সঞ্চালনা করেন এস এম শুভ। এই পর্বে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতা জলি তালুকদার, মাহবুব আলম এবং বিভিন্ন চা বাগানের পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ ও চা শ্রমিক প্রতিনিধিগণ।

বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, “১৮৫ বছরের বঞ্চনা আর চলবে না। ভূমির অধিকার ও দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি সহ ১০ দফা দাবি এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।” তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে চা-শ্রমিকদের এই ১০ দফা দাবি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জোর দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, “চা-শ্রমিকের সন্তান যেন আর কুঁড়েঘরে বড় না হয়, যেন শিক্ষার আলো ছুঁয়ে যায় প্রতিটি পরিবার, সেই স্বপ্ন নিয়েই আজকের সম্মেলন।” আজকের এই সম্মেলনকে তারা এক নতুন সংগ্রামের সূচনা হিসেবে অভিহিত করেন, যা রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে চা-শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
কাউন্সিল অধিবেশনে চা-শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র-র নবনির্বাচিত সভাপতি সবুজ তাঁতি-খাদিম চা বাগান, সিলেট। সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ দাস অলমিক- কালিটি চা বাগান, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার।ভূমি অধিকারসহ ১০ দফা দাবিতে চা-শ্রমিকদের ঐতিহাসিক সম্মেলন অনুষ্ঠিতভূমি অধিকার এবং দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরিসহ ১০ দফা দাবিতে চা-শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের ১ম জাতীয় সম্মেলন আজ শ্রীমঙ্গলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই সম্মেলন উদ্বোধন, সমাবেশ, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চা-শ্রমিকরা তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার ইতিহাস ও প্রতিরোধের চেতনা তুলে ধরেন।
উদ্বোধনী পর্ব ও সাংস্কৃতিক আয়োজন
সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং চা-শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আহ্বায়ক সবুজ তাঁতি সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চা শ্রমিক কেন্দ্রের সংগঠক মনীষা ওয়াহিদ।
এর আগে সকাল ১০টায় শুরু হয় সম্মেলনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। চা-জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি, সংগীত, আবৃত্তি ও নাটকের মাধ্যমে তারা তাদের বঞ্চনার ইতিহাস ও অধিকার আদায়ের দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করেন। বিশেষ করে ঐতিহাসিক “মুল্লুক চলো” আন্দোলন নিয়ে পরিবেশিত নাটকটি দর্শকদের গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
র্যালি ও সমাবেশে অধিকারের সুর
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর হাজার হাজার চা-শ্রমিকের অংশগ্রহণে একটি বিশাল র্যালি শ্রীমঙ্গল শহর প্রদক্ষিণ করে। ব্যানার, ফেস্টুন ও স্লোগানে মুখরিত এই র্যালিতে শ্রীমঙ্গলসহ সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ অঞ্চলের সহস্রাধিক চা-বাগান থেকে শ্রমিক, শিক্ষার্থী ও যুবকরা অংশ নেন।
সমাবেশে উদ্বোধকের বক্তব্যে কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম চা-শ্রমিকদের প্রতি চলমান বৈষম্যের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবথেকে নিপীড়িত, বঞ্চিত ও অবহেলিত এই চা-জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের লড়াই-সংগ্রামের পরও তাদের অধিকার বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “এরশাদের আমলে আমরা আন্দোলন করে অধিকার আদায় করেছি, কিন্তু আপনি চা জনগোষ্ঠীর ভূমির অধিকার দিতে আপনার সমস্যা কি? বাগানের বাইরেও অনেক জায়গা আছে যেগুলো তাদের দেওয়া যায়।” একইসাথে তিনি দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরিসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানান।
আলোচনা পর্ব ও ভবিষ্যতের অঙ্গীকার

সম্মেলনের পরবর্তী আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন সবুজ তাঁতি এবং সঞ্চালনা করেন এস এম শুভ। এই পর্বে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতা জলি তালুকদার, মাহবুব আলম এবং বিভিন্ন চা বাগানের পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ ও চা শ্রমিক প্রতিনিধিগণ।
বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, “১৮৫ বছরের বঞ্চনা আর চলবে না। ভূমির অধিকার ও দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি সহ ১০ দফা দাবি এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।” তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে চা-শ্রমিকদের এই ১০ দফা দাবি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য জোর দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, “চা-শ্রমিকের সন্তান যেন আর কুঁড়েঘরে বড় না হয়, যেন শিক্ষার আলো ছুঁয়ে যায় প্রতিটি পরিবার, সেই স্বপ্ন নিয়েই আজকের সম্মেলন।” আজকের এই সম্মেলনকে তারা এক নতুন সংগ্রামের সূচনা হিসেবে অভিহিত করেন, যা রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে চা-শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
কাউন্সিল অধিবেশনে চা-শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র-র নবনির্বাচিত সভাপতি সবুজ তাঁতি-খাদিম চা বাগান, সিলেট। সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ দাস অলমিক- কালিটি চা বাগান, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার।