সিলেট ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
News Title :
‎টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী ধুয়া গানের পুনরুজ্জীবন: ইউনুস বয়াতি ও ওয়াসিম বয়াতির মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ‎এসএসসি পরীক্ষার্থী জনি দাস হত্যা: আসামি সাজু মিয়া ৩ দিনের রিমান্ডে, জনতার উত্তম-মধ্যম ‎সিলেটে বিপণীবিতানগুলোতে ইচ্ছেমতো পার্কিং ফি আদায়, ক্ষুব্ধ নগরবাসী। ‎নবীগঞ্জে ভয়াবহ সংঘাত: জনমনে প্রশ্ন, দাবি শান্তির বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি শিক্ষা বৃত্তি-২০২৪ প্রদান: সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সফল আয়োজন । ‎গুপ্ত টি হাউজ: শ্রীমঙ্গলের এক বিশ্বস্ত নাম পাবলিক পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে শিক্ষকদের অনীহা, সমাধানে করণীয়! সবুজের ছায়ায় লাল-সবুজের খোঁজে:‎লক্ষ্মীবাওড় জলাবন গোয়াইনঘাটে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে লেঙ্গুড়া গ্রামবাসীর কঠোর হুঁশিয়ারি। সিলেট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার কাজী মাহবুব উর রহমানকে ছাড়পত্র: নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ।

ইতিহাসের ধারক ৬০০ বছরের পুরনো ‘বিথঙ্গলের আখড়া: এক ঐতিহ্যবাহী তীর্থস্থানের অন্বেষণ।

হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নিভৃত পল্লীতে, হাওরের কোলে ৬০০ বছরের প্রাচীন এক ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ‘বিথঙ্গলের আখড়া’।
বানিয়াচং উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং হবিগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে বিথঙ্গল গ্রামে অবস্থিত এই প্রাচীন আখড়াটি বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের কাছে এক অন্যতম তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত।
“আখড়ার প্রতিষ্ঠা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
৬০০ বা ৪০০ বছর পূর্বে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামী নামক এক পুণ্যাত্মা বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে বিথঙ্গলে এসে এই আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন। হবিগঞ্জের রিচি পরগনার অধিবাসী শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামী ছিলেন সে অঞ্চলের একজন বরেণ্য ব্যক্তি। বাংলা ১০৫৯ সনে তাঁর দেহত্যাগ হয় এবং তাঁর স্মরণে আখড়ার প্রাঙ্গণে একটি সুদৃশ্য মঠ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মঠটি কেবল একটি স্মৃতিসৌধ নয়, এটি শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর আধ্যাত্মিক সাধনা ও ত্যাগের এক জীবন্ত প্রতীক। মঠের সামনে একটি নাট মন্দির, পূর্ব পার্শ্বে একটি ভান্ডার ঘর এবং দক্ষিণে একটি ভোগ মন্দির রয়েছে, যা আখড়ার ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু। এছাড়াও আখড়া প্রাঙ্গণে আরও কয়েকটি পুরাতন ইমারত রয়েছে, যা এর দীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে।
“ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন এবং স্থাপত্যশৈলী:


বিথঙ্গলের আখড়া কেবল তার ধর্মীয় তাৎপর্যের জন্যই নয়, এর দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী এবং অমূল্য নিদর্শনের জন্যও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। আখড়ার অভ্যন্তরে বিদ্যমান ২৫ মণ ওজনের শ্বেত পাথরের চৌকি, পিতলের সিংহাসন, রথ, রৌপ্য নির্মিত পাখি এবং মুকুট ইত্যাদি দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এই আখড়ার বিশাল পরিসরে প্রায় ১২০টি কক্ষ রয়েছে বলে লোকমুখে প্রচলিত। ধারণা করা হয়, একসময় এই কক্ষগুলোতে ১২০ জন বৈষ্ণব বসবাস করতেন এবং আধ্যাত্মিক সাধনায় লিপ্ত থাকতেন। যদিও বর্তমানে বৈষ্ণবদের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন। আখড়াটি তার প্রাচীন ঐশ্বর্য ও মহিমা ধরে রেখেছে।
“এক ব্যতিক্রমী প্রসাদ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
বিথঙ্গলের আখড়ার একটি বিশেষ আকর্ষণ হলো দুপুরে ভক্তদের পরিবেশিত এক প্রকার প্রসাদ – সবজি ও খিচুড়ির এক সুস্বাদু মিশ্রণ। এই প্রসাদের অনন্য স্বাদ ভক্তদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এবং এর কারণে অনেকেই আখড়ায় আসেন। আখড়া পরিদর্শনের পাশাপাশি এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও পর্যটকদের মুগ্ধ করে। হাওরের মাঝখানে অবস্থিত এই গ্রামটি তার নিজস্ব এক সৌন্দর্য নিয়ে গড়ে উঠেছে। বিস্তীর্ণ হাওরের শান্ত জলরাশি, দিগন্তবিস্তৃত কাশবন এবং পাখির কিচিরমিচির শব্দ এক নিস্তব্ধ, শান্ত পরিবেশ তৈরি করে, যা শহরের কোলাহল থেকে দূরে এক অনাবিল শান্তির সন্ধান দেয়।
“ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় এবং আবাসন ব্যবস্থা:
স্থানীয়দের মতে, শরৎকাল বিথঙ্গলের আখড়া পরিদর্শনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। বর্ষার বিদায়ী আমেজ এবং হাওর জুড়ে তখনও ভরা পানি থাকায় এই সময়ে এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য আরও মনোরম হয়ে ওঠে। পূর্ণিমার রাতে আখড়া পরিদর্শনের আয়োজন করলে তা ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দময় করে তোলে, কারণ ভরা চাঁদের আলোয় হাওরের অপরূপ দৃশ্য সত্যিই অপার্থিব মনে হয়।
তবে যেহেতু এই আখড়াটি হাওরের মাঝে ছোট্ট একটি গ্রামে অবস্থিত, তাই এখানে থাকার জন্য কোনো হোটেল বা উন্নত আবাসন ব্যবস্থা নেই। তবে বিথঙ্গল বাজারে খাওয়ার সুবিধা রয়েছে, যা পর্যটকদের জন্য একটি স্বস্তির বিষয়।
“আয় নির্বাহ এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জ:
আখড়ার নিজস্ব ৪০ একর জমির উৎপাদিত ফসল এবং ভক্তদের দান থেকে এর যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ হয়। প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত রোগবালাই থেকে পরিত্রাণ এবং মানসিক শান্তির জন্য আখড়ায় আসেন।
তবে, হবিগঞ্জ জেলার এই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্থানটি যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। উপজেলা কিংবা জেলা সদরের সঙ্গে বিথঙ্গলের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী প্রাচীন এই আখড়া পরিদর্শন করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আগত অনেক পর্যটক এবং এলাকাবাসী মনে করেন, প্রাচীনতম এই ঐতিহাসিক স্থানটি সংরক্ষণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, পর্যটকদের জন্য মৌলিক সুবিধা এবং আখড়ার ঐতিহ্য সংরক্ষণে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা গেলে বিথঙ্গলের আখড়া কেবল একটি ধর্মীয় তীর্থস্থানই নয়, এটি বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করতে পারে।

“উপসংহার:
৬০০ বছরের পুরনো ‘বিথঙ্গলের আখড়া’ কেবল একটি ইমারত নয়, এটি বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং আধ্যাত্মিকতার এক জীবন্ত প্রতীক। এটি শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর স্মৃতি বহন করে চলেছে এবং বৈষ্ণব ধর্মের প্রচার ও প্রসারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই প্রাচীন নিদর্শনকে রক্ষা করা এবং এর ঐতিহাসিক গুরুত্বকে সবার সামনে তুলে ধরা আমাদের সকলের দায়িত্ব। সরকারের এবং স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিথঙ্গলের আখড়া তার অতীত গৌরব ফিরিয়ে এনে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে টিকে থাকবে – এই প্রত্যাশাই রইল।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

‎টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ঐতিহ্যবাহী ধুয়া গানের পুনরুজ্জীবন: ইউনুস বয়াতি ও ওয়াসিম বয়াতির মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা

ইতিহাসের ধারক ৬০০ বছরের পুরনো ‘বিথঙ্গলের আখড়া: এক ঐতিহ্যবাহী তীর্থস্থানের অন্বেষণ।

সময় ১০:০৮:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নিভৃত পল্লীতে, হাওরের কোলে ৬০০ বছরের প্রাচীন এক ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ‘বিথঙ্গলের আখড়া’।
বানিয়াচং উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং হবিগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে বিথঙ্গল গ্রামে অবস্থিত এই প্রাচীন আখড়াটি বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের কাছে এক অন্যতম তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত।
“আখড়ার প্রতিষ্ঠা ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
৬০০ বা ৪০০ বছর পূর্বে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামী নামক এক পুণ্যাত্মা বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে বিথঙ্গলে এসে এই আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন। হবিগঞ্জের রিচি পরগনার অধিবাসী শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামী ছিলেন সে অঞ্চলের একজন বরেণ্য ব্যক্তি। বাংলা ১০৫৯ সনে তাঁর দেহত্যাগ হয় এবং তাঁর স্মরণে আখড়ার প্রাঙ্গণে একটি সুদৃশ্য মঠ প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মঠটি কেবল একটি স্মৃতিসৌধ নয়, এটি শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর আধ্যাত্মিক সাধনা ও ত্যাগের এক জীবন্ত প্রতীক। মঠের সামনে একটি নাট মন্দির, পূর্ব পার্শ্বে একটি ভান্ডার ঘর এবং দক্ষিণে একটি ভোগ মন্দির রয়েছে, যা আখড়ার ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু। এছাড়াও আখড়া প্রাঙ্গণে আরও কয়েকটি পুরাতন ইমারত রয়েছে, যা এর দীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে।
“ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন এবং স্থাপত্যশৈলী:


বিথঙ্গলের আখড়া কেবল তার ধর্মীয় তাৎপর্যের জন্যই নয়, এর দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী এবং অমূল্য নিদর্শনের জন্যও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। আখড়ার অভ্যন্তরে বিদ্যমান ২৫ মণ ওজনের শ্বেত পাথরের চৌকি, পিতলের সিংহাসন, রথ, রৌপ্য নির্মিত পাখি এবং মুকুট ইত্যাদি দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। এই আখড়ার বিশাল পরিসরে প্রায় ১২০টি কক্ষ রয়েছে বলে লোকমুখে প্রচলিত। ধারণা করা হয়, একসময় এই কক্ষগুলোতে ১২০ জন বৈষ্ণব বসবাস করতেন এবং আধ্যাত্মিক সাধনায় লিপ্ত থাকতেন। যদিও বর্তমানে বৈষ্ণবদের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন। আখড়াটি তার প্রাচীন ঐশ্বর্য ও মহিমা ধরে রেখেছে।
“এক ব্যতিক্রমী প্রসাদ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য:
বিথঙ্গলের আখড়ার একটি বিশেষ আকর্ষণ হলো দুপুরে ভক্তদের পরিবেশিত এক প্রকার প্রসাদ – সবজি ও খিচুড়ির এক সুস্বাদু মিশ্রণ। এই প্রসাদের অনন্য স্বাদ ভক্তদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এবং এর কারণে অনেকেই আখড়ায় আসেন। আখড়া পরিদর্শনের পাশাপাশি এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও পর্যটকদের মুগ্ধ করে। হাওরের মাঝখানে অবস্থিত এই গ্রামটি তার নিজস্ব এক সৌন্দর্য নিয়ে গড়ে উঠেছে। বিস্তীর্ণ হাওরের শান্ত জলরাশি, দিগন্তবিস্তৃত কাশবন এবং পাখির কিচিরমিচির শব্দ এক নিস্তব্ধ, শান্ত পরিবেশ তৈরি করে, যা শহরের কোলাহল থেকে দূরে এক অনাবিল শান্তির সন্ধান দেয়।
“ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময় এবং আবাসন ব্যবস্থা:
স্থানীয়দের মতে, শরৎকাল বিথঙ্গলের আখড়া পরিদর্শনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। বর্ষার বিদায়ী আমেজ এবং হাওর জুড়ে তখনও ভরা পানি থাকায় এই সময়ে এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য আরও মনোরম হয়ে ওঠে। পূর্ণিমার রাতে আখড়া পরিদর্শনের আয়োজন করলে তা ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দময় করে তোলে, কারণ ভরা চাঁদের আলোয় হাওরের অপরূপ দৃশ্য সত্যিই অপার্থিব মনে হয়।
তবে যেহেতু এই আখড়াটি হাওরের মাঝে ছোট্ট একটি গ্রামে অবস্থিত, তাই এখানে থাকার জন্য কোনো হোটেল বা উন্নত আবাসন ব্যবস্থা নেই। তবে বিথঙ্গল বাজারে খাওয়ার সুবিধা রয়েছে, যা পর্যটকদের জন্য একটি স্বস্তির বিষয়।
“আয় নির্বাহ এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জ:
আখড়ার নিজস্ব ৪০ একর জমির উৎপাদিত ফসল এবং ভক্তদের দান থেকে এর যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ হয়। প্রতিদিন অসংখ্য ভক্ত রোগবালাই থেকে পরিত্রাণ এবং মানসিক শান্তির জন্য আখড়ায় আসেন।
তবে, হবিগঞ্জ জেলার এই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্থানটি যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। উপজেলা কিংবা জেলা সদরের সঙ্গে বিথঙ্গলের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে বিপুলসংখ্যক দর্শনার্থী প্রাচীন এই আখড়া পরিদর্শন করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আগত অনেক পর্যটক এবং এলাকাবাসী মনে করেন, প্রাচীনতম এই ঐতিহাসিক স্থানটি সংরক্ষণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, পর্যটকদের জন্য মৌলিক সুবিধা এবং আখড়ার ঐতিহ্য সংরক্ষণে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা গেলে বিথঙ্গলের আখড়া কেবল একটি ধর্মীয় তীর্থস্থানই নয়, এটি বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করতে পারে।

“উপসংহার:
৬০০ বছরের পুরনো ‘বিথঙ্গলের আখড়া’ কেবল একটি ইমারত নয়, এটি বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং আধ্যাত্মিকতার এক জীবন্ত প্রতীক। এটি শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ গোস্বামীর স্মৃতি বহন করে চলেছে এবং বৈষ্ণব ধর্মের প্রচার ও প্রসারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই প্রাচীন নিদর্শনকে রক্ষা করা এবং এর ঐতিহাসিক গুরুত্বকে সবার সামনে তুলে ধরা আমাদের সকলের দায়িত্ব। সরকারের এবং স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিথঙ্গলের আখড়া তার অতীত গৌরব ফিরিয়ে এনে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে টিকে থাকবে – এই প্রত্যাশাই রইল।