
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৫ নং পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়নের একদল উদ্যমী তরুণদের নিয়ে গঠিত ইকরা ফাউন্ডেশন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ যাত্রা শুরু করে মাত্র এক বছরেই তাদের কার্যক্রম ও অর্জনগুলো প্রমাণ করে, সততা, একতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে সবকিছুই সম্ভব।
গত এক বছরে ইকরা ফাউন্ডেশনের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:- ইকরা ফাউন্ডেশন বৃত্তি পরীক্ষা: শিক্ষা যে সমাজ উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি, সেই বিশ্বাস থেকে ইকরা ফাউন্ডেশন পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়নের ১৬টি প্রতিষ্ঠানের ১৭৯ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে একটি বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করে। ২৯ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ট্যালেন্টপুল, সাধারণ ও বিশেষ বৃত্তি প্রদান করা হয়। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু একটি পুরস্কার নয়, বরং আগামী দিনের জন্য অনুপ্রেরণা।
শিক্ষা বৃত্তি প্রদান: সমাজের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি থেকে এ বছর ৩ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মাদ্রাসাপড়ুয়া মুসলিম ছাত্রী এবং দুইজন হাইস্কুল পড়ুয়া ছাত্র (একজন মুসলিম ও একজন হিন্দু) রয়েছেন। এই উদ্যোগটি প্রমাণ করে যে, ইকরা ফাউন্ডেশন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যকে গুরুত্ব দেয়। এছাড়াও আরও ৪ জন শিক্ষার্থীকে ৪ সেট শিক্ষা সহায়ক বই প্রদান করা হয়।
কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা: এলাকার সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়া ২ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ সংবর্ধনা দিয়ে ইকরা ফাউন্ডেশন তাদের সাফল্যকে সম্মান জানিয়েছে। এই সম্মাননা অন্য শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে প্রেরণা দেবে।
গুণীজন সংবর্ধনা: সমাজের গুণী ও সফল ব্যক্তিদের সম্মান জানানো ইকরা ফাউন্ডেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। বিসিএস শিক্ষা, প্রশাসন, ও স্বাস্থ্য ক্যাডারে কর্মরত ৪ জন গুণীজন এবং একজন পিএইচডি গবেষকসহ মোট ৫ জনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তাদের সাফল্যের গল্প নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখতে এবং তা পূরণের জন্য অনুপ্রাণিত করবে।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি: একটি সবুজ ও সুস্থ পৃথিবী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৪টি প্রতিষ্ঠানে (৩টি মসজিদ ও ১টি কলেজ) বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই ছোট উদ্যোগটি পরিবেশকে সুস্থ ও সবুজ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
দাতা ও আজীবন সদস্যদের সম্মাননা: যারা আর্থিক ও মানসিকভাবে ইকরা ফাউন্ডেশনের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এটি কেবল সম্মান নয়, বরং পারস্পরিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার একটি নিদর্শন।
ইকরা ফাউন্ডেশন বছরজুড়ে বেশ কয়েকটি অর্থবহ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, যেমন – বৃত্তিপ্রাপ্তদের পুরস্কার বিতরণী, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় সভা এবং রমজানে ইফতার মাহফিল। এই অনুষ্ঠানগুলো সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করেছে এবং সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
ইকরা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, “আমাদের এই এক বছরের অর্জন হয়তো সংখ্যায় ছোট, কিন্তু এর প্রভাব বিশাল। আমরা বিশ্বাস করি, এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ইকরা ফাউন্ডেশন আগামী দিনে সমাজে শিক্ষা, নৈতিকতা ও মানবিকতার আলো ছড়িয়ে দিতে আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।”