
টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের পীরপুরে মসজিদের বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মুয়াজ্জিনের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বাড়িঘরে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১লা অক্টোবর সকাল আনুমানিক ১১টায় পীরপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের মসজিদের বিদ্যুৎ বিল নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ সময় মুয়াজ্জিন আলী হোসেন (১৭)-কে আওয়ামীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান ও তার লোকজন গুরুতরভাবে আহত করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ-সময় স্থানীয়রা আহত মুয়াজ্জিন আলী হোসেন-কে উদ্ধার করে ধোপাখালী বাজারের ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
চিকিৎসা শেষে তিনি বাড়ি ফেরার পথে সিদ্দিক গং পুনরায় তাঁর উপর হামলা চালায়। পীরপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রভাবশালী আওয়ামীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান মসজিদের মুয়াজ্জিন আলী হোসেনকে মারধর করেন এবং লোকজন এগিয়ে এলে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে, মুয়াজ্জিন আলী হোসেনের পিতা এরশাদ আলী, অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমান কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে গেলে, সিদ্দিক আলী তাঁর উপরও হামলা করেন বলে অভিযোগ করেন আহত মুয়াজ্জিনের পিতা।
এক পর্যায়ে এরশাদ আলী প্রাণভয়ে ঘরের ভেতরে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এরপর সিদ্দিক গং এরশাদ আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনেন।
এরশাদ আলী বলেন, সিদ্দিকুর রহমান মসজিদ কমিটির কোন পদে না থেকে কেন বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কথা বলবেন। ক্ষমতায় জোড়ে আমার সহজ স্বরল মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলে কে মারধোর করল! আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে সঠিক বিচার চাই।

আহত মুয়াজ্জিন আলী হোসেনের পিতা এরশাদ আলী গত ১লা অক্টোবর ধনবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ তিনি পীরপুর গ্রামের মুজা ফকিরের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান ও তার ভাই সবুজ, ভোলা ফরিরে ছেলে মৃদুল, আরশেদ ফকিরের ছেলে সিফাত, জলিল ফকিরের ছেলে ইমরান, জলিল ভুইয়ার ছেলে জিয়া সহ আরও অজ্ঞাত ২০/২৫ জন কে আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ধনবাড়ী থানার এস আই রাজীব সরেজমিনে তদন্তে যান। তিনি জানান, তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে, তিনি এলাকার মুরুব্বিদের জানান যে, যদি স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়, তবে তিনি আর আইনি পদক্ষেপ নিবেন না।
অভিযুক্ত আওয়ামী নেতা সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের কাছে হামলার কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, আমি মুয়াজ্জিন আলী হোসেন কে মসজিদে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কথা-কাটাকাটি জেরে উত্তেজিত হয়ে তাকে আমি দু’টি চর মারি। বাড়িঘরে হামলার কথা অস্বীকার করেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি হারুন ফকির ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “আমি ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক মুয়াজ্জিন আলী হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার মায়ের কাছে ঘটনার বিবরণ জানি। আমি তার মাকে আশ্বাস দেই যে, বিষয়টি সামাজিকভাবে দেখা হবে।” আগামীকাল সকাল ৯ টায় সামাজিক ভাবে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।