
ছবি- ধনবাড়ী সংবাদের সৌজন্যে।
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় যদুনাথপুর ইউনিয়নের গবিন্দপুর আলিম মাদ্রাসার (কৃষি বিভাগের) সহকারী শিক্ষিকা আই বি ডেইজি ওরফে জেসমিন নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে ধনবাড়ী থানা পুলিশ।
পরিবার এটিকে আত্মহত্যা নয়, বরং ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে দাবি করেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে পাশ্ববর্তী জামালপুর জেলার রশিদপুর ইউনিয়নের সেনা সদস্য মোঃ রুবেল আহমেদ-এর সাথে ডেইজির বিয়ে হয়। মাদ্রাসায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য তারা ধনবাড়ীর নেটামশরা নতুন বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। পরিবারের তথ্য অনুযায়ী, ডেইজি সংসারে বাড়তি আয়ের জন্য নিজের ঘরে হোমিও চিকিৎসাও দিতেন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর, পূজার ছুটিতে সেনা সদস্য রুবেল আহমেদ তাদের ভাড়া বাসায় আসেন। রুবেল আহমেদের ভাষ্যমতে, তিনি বাসায় আসার পর জমির খারিজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এই সময়ে স্ত্রী ডেইজি একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরতে পারেননি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তিনি সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল আনতে বাজারে যান।
বাজার থেকে ফিরে এসে তিনি একাধিকবার স্ত্রীকে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে বাসার অন্য দরজা দিয়ে রুমে ঢুকে দেখেন স্ত্রী ডেইজি নাইলনের রশি দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছেন। তিনি দ্রুত ঝুলন্ত দেহটি বিছানায় নামিয়ে আনেন এবং দেখেন যে স্ত্রী তখনও মারা যাননি বলে দাবী করেন! এরপর মাথায় পানি দিয়ে, হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ভ্যান আনতে বাইরে ছুটে যান।

মৃত শিক্ষিকা আই বি ডেইজির ভাই মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম মিজান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানান, তাঁর বোনের মৃত্যুর ছয় মাস পূর্বে লেখা একটি কাগজে যৌতুক, ডেইজির বেতনের টাকা এবং রুবেলের রেশন কার্ডে ডেইজির নামের বদলে অন্য এক মহিলার নাম থাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো!
তিনি বলেন, “আমাদের দাবি ডেইজি আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে, আমরা এ হত্যার বিচার চাই।”
ডেইজির বড় বোন জামাই মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, রাত ১০:৩০ মিনিটে তার স্ত্রী (ডেইজির বড় বোন) ফোন দিয়ে জানান যে ডেইজি মারা গেছে। তিনি সাথে সাথে ধনবাড়ী থানায় বিষয়টি অবগত করে ঘটনাস্থলে এসে দেখেন তার শ্যালিকা মৃত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন এবং রুবেল লাশের পাশেই শুয়ে আছেন।
নুরুল ইসলাম আরও বলেন, “তাদের সংসার আগেই থেকেই উত্তপ্ত ছিল। রুবেল বিভিন্ন সময় আমার শালিকাকে মারধর করতো এবং হুমকি দিতো যে, ‘তোকে মেরেই আমি জেলে যাবো’! আমার মনে হয় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। আমরা ধনবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করবো।”
এ ব্যাপারে ধনবাড়ী থানার কর্তব্যরত অফিসার এস আই জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা তদন্ত করছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের মাধ্যমে বিস্তারিত বলা যাবে।”