
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন স্থানীয় একজন শিক্ষক।
তিনি চিঠিতে দুর্নীতির মহোৎসব, স্বাস্থ্যসেবার করুণ দশা, নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থা, চোরাচালান, এবং চাঁদাবাজির মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য ও স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা
চিঠিতে শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, গোয়াইনঘাটের প্রতিটি সরকারি অফিসে দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে।
বিশেষ করে ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস,ইউনিয়ন ভূমি অফিস, এবং নির্বাচন অফিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
একমাত্র উপজেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই, যার ফলে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরবস্থার কারনে পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায়,পর্যটন খ্যাত এলাকা হওয়া সত্ত্বেও গোয়াইনঘাটের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশেষ করে সিলেট-সালুটিকর-গোয়াইনঘাট এবং হাদারপাড়-বিছনাকান্দি রাস্তার বেহাল দশার কারণে পর্যটকদের যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে।
এই কারণে বিছনাকান্দি থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, যা পুরো এলাকার জন্য লজ্জাজনক। এবং এলাকার ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চোরাচালানের কাজে ব্যবহৃত দ্রুতগতির পিকআপ ও অবৈধ ট্রাক্টরের কারণে সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এই উপজেলার সীমান্তগুলো চোরাচালানের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। বিজিবি, পুলিশ এবং দালালদের যোগসাজশে ভারতীয় অবৈধ মালামালের চোরাচালান চলছে। রয়্যালটির নামে নৌপথে অতিরিক্ত চাঁদাবাজির অভিযোগও আনা হয়েছে।
শ্রমিকদের দুর্ভোগ এবং বিত্তবানদের উত্থান
পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় হাজার হাজার শ্রমিক মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জরুরি বলে চিঠিতে দাবি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কিছু ব্যক্তি কোয়ারিকে পুঁজি করে শ্রমিকদের দুর্দশার সুযোগ নিয়ে রাতারাতি হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
চিঠিতে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) বিরুদ্ধেও দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।
শিক্ষক রুহুল আমিন আশা প্রকাশ করেন, জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলমের সততা ও কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে গোয়াইনঘাটের এই সমস্যার সমাধান হবে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।